আমাদের বর্তমান জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে জেন্ডার, প্রজননস্বাস্থ্য ও এইচআইভি/এইডসসম্পর্কিত বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষাব্যবস্থাকে জেন্ডার সংবেদনশীল করে গড়ে তোলা দরকার। এ লক্ষ্যে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিএনপিএস-এর উদ্যোগে নেত্রকোনা জেলার সদর ও বারহাট্টা উপজেলা এবং ঢাকা মিলিয়ে মোট ৬টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে আমরা যে বিরল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা প্রণিধানযোগ্য। এর মাধ্যমে বুঝেছি যে, বড়ো বড়ো কাজে নানারকম বাধা থাকলেও মানুষের মনের বাধাটিই আসলে বড়ো বাধা। যেটি অতিক্রম করা গেলে সাফল্য সুনিশ্চিত হয়ে ওঠে।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুর দিকে মডিউল প্রস্তুত, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষকদের টিওটি সফলভাবে সম্পন্ন করার পরও আমরা যারা মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলাম, তারা ভুগছিলাম এক অজানা আশঙ্কায়, যে, না জানি কী হয়! শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সাথে বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন তো! নাকি মাঝখানে এসে বলবেন যে, আমাদের পক্ষে এই আলোচনা সম্ভব না! আবার শিক্ষকগণ আলোচনা করলেও অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিবেন তো! এ ধরনের নানা আশঙ্কা আমাদের মনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু তবু নিজের মনের এই অবস্থাটি কারো কাছেই প্রকাশ করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, যদি পূর্বেই এই আশঙ্কা বা ভবিষ্যৎ ঝুঁকির কথা বলি, তবে অনেকেই হয়ত আমাদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
ভাবনাচিন্তার শেষে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন পর্বে গিয়ে দেখা গেল, শুরুতে আমরা যে ধরনের আশঙ্কা বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম, বাস্তবে কোথাও তার ছিটেফোঁটাও নেই। খুব আন্তরিক ও সাবলীলভাবেই শিক্ষকগণ পড়াচ্ছেন বিষয়গুলো। এমনকি অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে যে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম, তাদের দিক থেকেও কোনো বাধা এল না। বরং এল প্রতিক্রিয়া। তাঁরা বললেন, এই কাজটি তো আমাদের সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগেই হওয়া দরকার। অথচ করছেন আপনারা। তাঁরা আরো জানালেন যে, বয়ঃসন্ধিকালে এ ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য সকল শিক্ষার্থীকে জানানো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুর দিকে পরিকল্পিত কর্মসূচি বিষয়ক ধারণা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত বারহাট্টা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বললেন, বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের জেন্ডার সংবেদনশীল করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করলেও বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন ও প্রজননস্বাস্থ্য-বিষয়ক শিক্ষা সেইভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় নি। এইচআইভি/এইডস বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও অনেক শিক্ষকই তা ক্লাসে না পড়িয়ে বাড়িতে পড়ে নিতে বলেন। অথচ বিষয়গুলো অত্যন্ত দরকারি। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় এসব বিষয় জানতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝেও যে আগ্রহ আছে তা আপনারা প্রমাণ করলেন এবং আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে যে অনেক কঠিন কাজও বাস্তবায়ন করা সম্ভব তা আপনারা হাতেকলমে করে দেখাচ্ছেন।
আমার মনে হয়, যেকোনো কাজের মনের বাধা ডিঙানো গেলে কখনো কখনো অসম্ভবকেও সম্ভব করে তোলা যায়। প্রথম ধাপে আমরা সফল হয়েছি। এই সাফল্য আমাদের যে সাহস দিয়েছে, তা নিয়ে এই লক্ষ্যে আমরা আরো অনেকদূর যেতে পারব বলে বিশ্বাস করি। হয়ত এ পথ বেয়ে একদিন আমরা দেখব পাবো, আমাদের জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামটিই জেন্ডার সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। সেই স্বপ্নেই এখন আমাদের বসবাস।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুর দিকে মডিউল প্রস্তুত, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষকদের টিওটি সফলভাবে সম্পন্ন করার পরও আমরা যারা মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলাম, তারা ভুগছিলাম এক অজানা আশঙ্কায়, যে, না জানি কী হয়! শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সাথে বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন তো! নাকি মাঝখানে এসে বলবেন যে, আমাদের পক্ষে এই আলোচনা সম্ভব না! আবার শিক্ষকগণ আলোচনা করলেও অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিবেন তো! এ ধরনের নানা আশঙ্কা আমাদের মনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু তবু নিজের মনের এই অবস্থাটি কারো কাছেই প্রকাশ করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, যদি পূর্বেই এই আশঙ্কা বা ভবিষ্যৎ ঝুঁকির কথা বলি, তবে অনেকেই হয়ত আমাদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
ভাবনাচিন্তার শেষে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন পর্বে গিয়ে দেখা গেল, শুরুতে আমরা যে ধরনের আশঙ্কা বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম, বাস্তবে কোথাও তার ছিটেফোঁটাও নেই। খুব আন্তরিক ও সাবলীলভাবেই শিক্ষকগণ পড়াচ্ছেন বিষয়গুলো। এমনকি অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে যে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম, তাদের দিক থেকেও কোনো বাধা এল না। বরং এল প্রতিক্রিয়া। তাঁরা বললেন, এই কাজটি তো আমাদের সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগেই হওয়া দরকার। অথচ করছেন আপনারা। তাঁরা আরো জানালেন যে, বয়ঃসন্ধিকালে এ ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য সকল শিক্ষার্থীকে জানানো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুর দিকে পরিকল্পিত কর্মসূচি বিষয়ক ধারণা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত বারহাট্টা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বললেন, বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের জেন্ডার সংবেদনশীল করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করলেও বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন ও প্রজননস্বাস্থ্য-বিষয়ক শিক্ষা সেইভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় নি। এইচআইভি/এইডস বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও অনেক শিক্ষকই তা ক্লাসে না পড়িয়ে বাড়িতে পড়ে নিতে বলেন। অথচ বিষয়গুলো অত্যন্ত দরকারি। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় এসব বিষয় জানতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝেও যে আগ্রহ আছে তা আপনারা প্রমাণ করলেন এবং আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে যে অনেক কঠিন কাজও বাস্তবায়ন করা সম্ভব তা আপনারা হাতেকলমে করে দেখাচ্ছেন।
আমার মনে হয়, যেকোনো কাজের মনের বাধা ডিঙানো গেলে কখনো কখনো অসম্ভবকেও সম্ভব করে তোলা যায়। প্রথম ধাপে আমরা সফল হয়েছি। এই সাফল্য আমাদের যে সাহস দিয়েছে, তা নিয়ে এই লক্ষ্যে আমরা আরো অনেকদূর যেতে পারব বলে বিশ্বাস করি। হয়ত এ পথ বেয়ে একদিন আমরা দেখব পাবো, আমাদের জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামটিই জেন্ডার সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। সেই স্বপ্নেই এখন আমাদের বসবাস।
সুরজিত ভৌমিক
বারহাট্টা কেন্দ্র
No comments:
Post a Comment
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মত জানান (যদি থাকে)