গত ১৫ জানুয়ারি ২০১১ দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত নিজামীদের অবস্থা জানতে চেয়ে সরকারকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের চিঠি শীর্ষক সংবাদটিতে এই নিবন্ধকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিট্রেরি ডিটেনশন’-এর নামে গত ১২ সেপ্টেম্বর জেনেভাস্থ বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনপ্রধানের মাধ্যমে ৬০ দিনের মধ্যে ৩৫ দফার সুস্পষ্ট জবাব চেয়ে সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। চিঠিটি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাত হয়ে বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও বাংলাদেশ পুলিশের কাছে রয়েছে। প্রয়োজনে ওয়ার্কিং গ্র“পকে জানিয়ে এক মাস সময় বাড়িয়ে নেওয়া যাবে বলে চিঠিতে একটি শর্ত যুক্ত ছিল। ওই শর্তের বলে ৬০ দিনেরও অতিরিক্ত সময়ের সুবিধা নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট চিঠির জবাবদানের প্রস্তুতি চলছে বলে সংবাদসূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অব আরবিট্রেরি ডিটেনেশন’-এর প্রধান রেপোরটিয়ার এল হাডযি মালিক সো জেনেভায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি মো. আবদুল হান্নানের কাছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে জানতে চেয়ে যে চিঠি দিয়েছেন তাতে উল্লিখিত ৩৫ দফার মধ্যে রয়েছে তখন পর্যন্ত আটককৃত ৬ যুদ্ধাপরাধীর আটকের কারণ, আইনের ভিত্তি, ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন।
সংবাদটি থেকে জানা গেল, আটককৃতদের নিয়োগকৃত আইনজীবীরা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কাছে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে পিটিশন জমা দেয়, যার ভিত্তিতে কমিশন এই চিঠি দিয়েছে। এটা আমরা বিভিন্ন সময়ে নানা উৎস থেকে শুনেছি ও দেখেছি যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চলমান উদ্যোগকে নিরুৎসাহিত করা, বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দান, এমনকি বিচারের সমুদয় আয়োজন পণ্ড করার জন্য দেশের ভিতরে নানাভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও লবিয়িংয়ের কাজ চলছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লবিয়িং নিয়ে এতদিন ধরে শোনা কথাগুলো যে মোটেই উড়োকথা নয়, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের এই চিঠিটিই তার প্রমাণ। যে চিঠির ভিতর দিয়ে আটককৃত যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি মানবাধিকার কমিশনের একটি উদ্বেগই প্রকাশিত হয়েছে।
আমরা জানি, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযোগ জানাবার জন্য প্রশস্ত ক্ষেত্র, যা সবার জন্যই উন্মুক্ত। সে বিচারে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে এরকম পিটিশন সেখানে জমা পড়তে পারে না তা নয়। কাজেই এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাসে শহীদ ৩০ লক্ষ নারী-পুরুষ, হেনস্থা ও ধর্ষণের শিকার চার লক্ষ নারী, এক কোটিরও বেশি মানুষের শরণার্থী হতে হওয়ার বিপরীতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালনকারী দেশি-বিদেশি অপরাধীদের বিচার যে স্বাধীনতা-পরবর্তী ৪০ বছরেও হলো না, সে ব্যাপারে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কোনো উচ্চবাচ্য নেই কেন? কমিশনের কাছে কি এসব তথ্য নেই? যদি থাকে তাহলে প্রশ্ন জাগে যে, অপরাধীর মানবাধিকারের দেখভাল করার আগেই কি অপরাধের শিকার নারী-পুরুষের মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি কমিশনের কাছে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবার কথা নয়?
সম্প্রতি জাতিসংঘের হাইকমিশনার বান কি মুন সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের প্রতি তাঁর নিজের দেশের জনগণকে হত্যা করার তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় নিজ দেশের জনগণকেই হত্যা করেছিল। ওদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে তাহরির স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত বিদ্রোহী মিশরবাসীর এক জমায়েতে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ায় মিশরের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্টের এখন বিচারকার্য চলছে। প্রায় ৮৫০ জন মানুষকে হত্যার নির্দেশদান ও অন্যান্য অপরাধে তার ফাঁসি পর্যন্ত হতে পারে বলে আইন বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে এর কয়েক হাজারগুণ বেশি মানুষের মৃত্যুঘটনা এবং নানা ভোগান্তির শিকার মানুষের বিচার পাবার দাবি বছরের পর বছর উপেক্ষিত হচ্ছে দেখে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কোনো উদ্বেগ নেই।
এখানে হয়ত বলা হবে যে, কমিশনের উদ্বেগ নির্ভর করে অভিযোগের ভিত্তিতে। যেহেতু অপরাধীদের পক্ষ থেকেই অভিযোগ জমা পড়েছে, কাজেই তারা তাদের পক্ষেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক্ষেত্রে আমার জিজ্ঞাস্য এই যে, যেহেতু জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন যন্ত্রচালিত নয় বরং মনুষ্যচালিত প্রতিষ্ঠান, কাজেই সংস্থাটির এ ধরনের কার্যকলাপ কি তার গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না? সরকারের কাছে কমিশনের জানতে চাওয়ার তালিকায় এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের ‘আটকের কারণ’ পর্যন্ত যুক্ত হওয়াকে আমার কাছে নিতান্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়। ভাবতে হয় যে, যুদ্ধাপরাধীদের আটকের কারণ হয়ত তাদের জানা নেই। কিন্তু এরকম একটা বড়ো গণহত্যার ঘটনার তথ্য তাদের কাছে না-থাকাটা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। এই অবিশ্বাস্য ব্যাপারটাই যদি আমাদের বিশ্বাস করতে হয়, তাহলে বলতে হবে যে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কেবল নামেই জাতিসংঘ কমিশন এবং সংস্থাটির কার্যক্রম আসলে প্রো-পিপল নয়!
সবারই জানা আছে যে, দরিদ্ররাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার বেশি হয়। একাত্তরে হত্যা-ধর্ষণ-লুণ্ঠন ও অগ্নিকাণ্ডের শিকার এবং শরণার্থীর জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সিংহভাগই ছিল দরিদ্র। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারপ্রার্থী হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন পরিচালনার সামর্থ্য ও সক্ষমতা দরিদ্রদের থাকে না। এই দরিদ্রশ্রেণির মানুষের পক্ষে যদি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে না-দাঁড়ায়, তাহলে এই শ্রেণির মানুষের মানবাধিকারবঞ্চিত হয়েই জীবন অতিবাহন করতে হবে। সেক্ষেত্রে এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে মানবাধিকার কমিশনের মহিমা রীতিমতো নিষ্প্রভ হয়ে যেতে বাধ্য, যদি তেমন কোনো মহিমা এ সংস্থার থেকে থাকে।
আমরা জানি, আমাদের দেশে সরকারি-বেসরকারি ও ছোটো-বড়ো অনেক মানবাধিকার সংগঠন কাজ করে। তার মধ্যে কয়েকটি মাত্র সংগঠন তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করাসহ অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করছে। কিন্তু মানবাধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সাথে যারা কর্মরত, তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনসহ আন্তর্জাতিক অপপ্রচারের বিষয়ে কী ভূমিকা পালন করছেন, তার কোনো নমুনা আমরা কোথাও দেখছি না। তারা কেন এতদিনেও দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সহায়তা প্রদানের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনে কোনো পিটিশন দাখিল করেন নি? তাদের কাজ নিশ্চয়ই কেবল প্রকল্প বাস্তবায়ন নয়। সেক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার কার্যকর করায় তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের জানতে ইচ্ছে করে।
বর্তমান অবস্থায় আমাদের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উচিত একক ও সম্মিলিতভাবে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করার অনুকূলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জনমত সংগঠিত করা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনসমূহের কাছে একাত্তরে এদেশে সংঘটিত ভয়াবহ অপরাধসমূহের বিবরণ তুলে ধরা, যাতে কোটি কোটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিপরীতে সংঘটিত এসব অপরাধের যথাযথ বিচার নিষ্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে দেশে একটি ন্যায়ের দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংঘটনের লক্ষ্যে পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব এককভাবে সরকারের নয়, এ দায়িত্ব সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিমানুষ পর্যন্ত। আমি আশা করব, মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিচারপ্রাপ্তির আকাক্সক্ষাটি বাস্তবায়নের অনুকূলে তৎপর হয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো যথাযথ কাজটি করবে।
আরেকটি কথা, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক প্রেরিত চিঠিতে উল্লিখিত আছে অতিরিক্ত সময়েও চিঠির জবাব না-দিলে ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের কাছে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের বক্তব্য বা মতামত জানিয়ে দেবে। আমার মনে হয়, কমিশনকে এরকম সুযোগ না-দিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সময়ের মধ্যেই জবাব দিয়ে দেয়া উচিত, তা নইলে আন্তর্জাতিক মহলে এ নিয়ে নানা কথা উঠবে। যদিও আমি মনে করি না যে, চিহ্নিত এসব যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ক্ষেত্রে কোনো আন্তর্জাতিক চাপের কাছে পরাভূত হবার দরকার আছে। কারণ এই বিচার নিশ্চিত হলে কোনো যুক্তিতেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে না, বরং ৪০ বছর ধরে যে কোটি কোটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিচারের দাবি উপেক্ষিত হয়ে এসেছে, তাদের বিচার পাবার অধিকারের প্রতিই যথাযথ সাড়া প্রদান করা হবে। কারণ আমি মনে করি, আগে বিবেচিত হওয়া উচিত অপরাধের শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মানবাধিকার, তারপরে অপরাধীর। আর সেটা হলে রাষ্ট্রে ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটা পাটাতন তৈরি হবে।
বর্তমানে পাকিস্তানের রাজনীতিতে সক্রিয় বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ইমরান খান তাঁর দেশে পশতুনদের ওপর পরিচালিত নির্যাতনের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য কারাভানের জানুয়ারি সংখ্যায় বলেছেন যে, ১৯৭১ সালের ঘটনা থেকে পাকিস্তান কিছুই শিক্ষা নেয় নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধ সংঘটনকারীরা শাস্তি পেলে পাকিস্তানের বর্তমান পরিণতিতে উপনীত হতে হতো না। তিনি যথার্থই বলেছেন। কোনো ব্যক্তিমানুষ বা সমাজ-রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ কোনো অপরাধ করে আইনানুগ শাস্তির আওতায় না-এলে সেখানে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আজকের পাকিস্তানের দিকে তাকালেই সেখানকার অরাজকতা টের পাওয়া যায়। যুদ্ধাপরাধের বিচার না-হওয়ায় ভিন্নমাত্রায় একইরকম পরিস্থিতি ঘটেছে আমাদের দেশেও। ধারণা করা হয়, স্বাধীনতার সাড়ে চার বছরের মাথায় ১৯৭৫-এ সপরিবারে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনাটি ঘটত না, যদি এদেশে অবস্থানকারী পাকদোসরদের বিচারকার্য সম্পন্ন হতো। ৭৫-এর জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানি কায়দায় দেশে সামরিক শাসন শুরু হয়। তার বলে বাহাত্তরে প্রণীত সংবিধান থেকে অনেক প্রগতিশীল ও আধুনিক ধারা কর্তন, গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব প্রদান এবং রাজনীতিতে ধর্মের উগ্র ব্যবহার যুদ্ধাপরাধের বিচার না-হওয়ারই কুফল। সর্বোপরি, এর ফলে আমাদের দেশের মানুষের ব্যক্তিগত আচার-আচরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায় ও রাজনীতি পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানি সংস্কৃতি গেঁড়ে বসে। সামরিক-আমলাতান্ত্রিক পাকিস্তানি সংস্কৃতির বিকাশ রহিত করে দেশে একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি আমরা এখনো প্রতিষ্ঠা করে উঠতে পারি নি। ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের এই ক্ষত শুকাতে আমাদের হয়ত আরো সময় লাগবে।
বাংলাদেশকে আমরা একটি ন্যায়তৎপর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। আর সেজন্যই যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন হওয়া জরুরি; যে উদ্যোগের সাফল্যের জন্য বিচারের উদ্যোগগ্রহণকারী সরকারকে সহযোগিতা করে যেতে হবে সকল বিবেকবান মানুষের। বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক বিরোধিতা বা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার অজুহাত দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারের লক্ষ্যে সরকারের নেয়া উদ্যোগের বিরোধিতা করা কোনোভাবেই মানবাধিকারের পক্ষে যাওয়া নয়। এক্ষেত্রে যারা ‘আন্তর্জাতিক মান’-এর প্রশ্ন টেনে আনছেন, তারা এ কথায় ঠিক কী বোঝাতে চান সে ব্যাপারে তাদের আরো ঝেড়ে কাশতে হবে। ঢালাও বক্তব্য না-দিয়ে চলমান বিচারপ্রক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট কোনো ঘাটতি থাকলে বাস্তব পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নিয়ে কীভাবে তার সমাধান করা যায়, প্রকৃতপক্ষে এখন দরকার সেরকম পরামর্শ।